Posts

  গঙ্গা ফড়িং ২৩ শে জুন ১৭৫৭, পলাশীর আমবাগান ।   সবেমাত্র পলাশীর যুদ্ধ শুরু হয়েছে । ণবাব সিরাজের নেতৃত্বে পঞ্চাশ হাজার সৈন যুদ্ধে নিজেদের প্রাণ দেওয়ার জন্যে প্রস্তুত । আর উল্টোদিকে কর্নেল রবার্ট ক্লাইভ এর কাছে মেরে কেটে সাড়ে সাতশ থেকে হাজার সৈন   তাও ইংরেজ ও ভারতীয় সিপাই মিলে । ক্লাইভের ইংরেজি হুংকারের প্রত্যুতারে সবে মাত্র নবাব হাতে তলোয়ার নিয়ে একটা গম্ভীর হুংকার ছেড়েছেন । হঠাৎ একটা   গঙ্গা ফড়িং এসে সোজা নবাব সিরাজের নাকের উপরে বসল । এতবড় স্পর্ধা , যুদ্ধের ময়দানে নাবাবের নাকে গঙ্গা ফড়িং । সেটা মোটেও সহ্য হলোনা । বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব সিরাজউদ্দৌলা কিনা নাকের উপর গঙ্গা ফড়িং নিয়ে যুদ্ধ করবেন । আর কি, গঙ্গা ফড়িংটাকে নাবাবের নাক থেকে তুলে সোজা কেরসিনের আলোর কাঁচে চেপে ধরতে যাব   কি, মাথার পিছনে    এক চাঁটি । চমকে উঠে ভাবলাম, -একি   যুদ্ধ তো আমার ইতিহাস বইয়ের পাতায় চলছে তাহলে..... । বুঝলাম মা আমাদের পিছনে শুয়ে শুয়ে সব কিছু দেখছিল, -তোর এটা কি পড়া হচ্ছে? -         -- না, পড়ছিলাম তো , একটা গঙ্গা ফড়িং এসে বই এর সিরাজের ছবির উপর বসে পড়ল । যাই হোক মাএর চাঁটি খেয়ে অগত্যা আবার যুদ্ধ শুর

নিত্য যাত্রী

  নিত্য যাত্রী আর কারও ঠকবার ইচ্ছা আছে নাকি? আশি থেকে নিরানব্বই ।  আওয়াজটা নিত্যর  খুব চেনা। প্রায় রোজই অফিস থেকে ফেরার সময় ভিড় লোকাল ট্রেনে এক বৃদ্ধ হাতে একটা বড় কাঁচের বোতল নিয়ে লজেন্স বিক্রি করে। প্রথম প্রথম নিত্য   বুঝতে পারত না যে লজেন্স বিক্রির সঙ্গে আশি থেকে নিরানব্বই পর্যন্ত ঠকার কি সম্পর্ক। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই বুঝতে পারলো যে ওই লোকটি উনিশশ  আশি থেকে এই উনিশশ  নিরানব্বই পর্যন্ত এইভাবে লজেন্স বিক্রি করছে, মানে যাত্রীদের ঠকিয়ে আসছে । সারাদিন অফিসে পরিশ্রম করার পর ফেরার পথে এই ভিড় ট্রেনে ক্লান্ত শরীরে ঠকতে খুব একটা খারাপ লাগে না ।   নিত্য মজুমদারের মতো সমস্ত নিত্য যাত্রীদের কাছে এরা একরকমের আত্মীয়ের মতো। অফিসের কেউ খোঁজ   করুক বা না করুক, এরা দেখা হলেই কিন্তু কুশল বিনিময় করতে দ্বিধা করে   না। তা সে ঠকুক বা না ঠকুক। এরইমধ্যে পিছনের গেটের দিক থেকে আওয়াজ আসে,  - A   ফর আপেল B ফর বল, আজকের আপেল না খেলে দিনটাই বিফল।  চ্যাটার্জীদা তার ছোট্ট জলের বোতল মুখে তুলতে তুলতে বলে ওঠেন,  -    ওই A ফর আপেল, এক কিলো দিও ফেরিওয়ালা তার ঝুড়িতে ফল থাকা   সত্বেও ঠোঁটের কোণে একটুকরো হাসি নিয়ে বলে